সংরক্ষণ বলতে সঠিক নিয়মে রেখে দেওয়াকে বোঝায়। এখানে ব্যবহৃত বস্ত্রাদি ধোয়া ও ইস্ত্রি করার পর যথাযথ স্থানে স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য রেখে দেওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে। আমরা নানা ধরনের কাপড়চোপড় ব্যবহার করি। এদের মধ্যে ঘরোয়া পোশাক, বাইরের পোশাক, উৎসব-অনুষ্ঠানের পোশাক, মৌসুমি পোশাক অন্তর্গত। এ ছাড়া প্রায় সব বাড়িতে বিছানাপত্র এবং গৃহসজ্জার নানা টেবিল ক্লথ, কুশন কভার, ন্যাপকিন, ট্রে ক্লথ ইত্যাদি থাকে। এগুলোর উজ্জ্বলতা, সৌন্দর্য ও স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য সঠিকভাবে যত্ন ও সংরক্ষণ করতে হয়। সংরক্ষণ একক হিসেবে স্টিল ও কাঠের আলমারি, বড় স্টিলের বক্স, সুটকেস ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়।
কাপড় সংরক্ষণের লক্ষণীয় বিষয় :
- দামি কাপড়, সাধারণ কাপড় ভাগ ভাগ করে রাখলে সুবিধা হয়।
- বড় কাপড়, ছোট ছোট কাপড় ভাগে ভাগে সংরক্ষণ করা হলে প্রয়োজনের সময় সহজে খুঁজে পাওয়া যায় ৷
- কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিন দিতে হয়।
- লেপের কভার, বিছানার চাদর, কম্বল প্রভৃতি ভাঁজে ভাঁজে কালোজিরা, শুকনা চা পাতা কাপড়ের পুটলিতে বেঁধে রেখে দেওয়া যায়। নিমপাতাও রাখা ভালো ।
- মাঝে মাঝে রোদে দিয়ে শুকিয়ে নিলে কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর হয় ।
শীতকাল ছাড়া বছরের অন্য সময়ে পশমি বস্ত্র ব্যবহৃত হয় না। বছরের ২-৩ মাস পশমি বস্ত্র ব্যবহৃত হয়।
বছরের বাকি সময় এগুলো তোলাই থাকে। পশমি বস্ত্রের দাম তুলনামূলক বেশি। সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ
করতে পারলে পশমি কাপড় অনেক দিন পর্যন্ত টেকে।
সংরক্ষণের উপায়গুলো নিম্নরূপ—
- পশমের সবচেয়ে বড় শত্রু মথ। ময়লা পশমি কাপড়ে এদের আরও বেশি উপদ্রব হয়। মথ পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে কাপড় সংরক্ষণের আগেই সঠিক নিয়মে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
- এরপর ইস্ত্রি করে বাতাসে শুকিয়ে আর্দ্রতামুক্ত করে নিতে হয়। তারপর ভাগে ভাগে আলমারি বা বক্সের মধ্যে ভরে রাখতে হয় ।
- কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিন দিতে হবে। এ ছাড়া শুকনো নিমপাতা, তামাক পাতা কাপড়ে জড়িয়ে ভাঁজে ভাঁজে রাখা যায় ৷
- সংরক্ষণ করার আগে আলমারি বা বক্সে কীটনাশক স্প্রে করে নিলে ভালো হয়।
- সংরক্ষিত কাপড়গুলো মাঝে মাঝে বের করে হালকা রোদে মেলে বাতাসে লাগিয়ে স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর করতে হয়।
- পশমি কোট, প্যান্ট, জ্যাকেট প্রভৃতি আলমারির ভেতর হ্যাঙারে ঝুলিয়ে রাখলে ভালো থাকে।
- রেশমি বস্ত্র মূল্যবান হয়ে থাকে। এসব বস্ত্র ব্যবহারোপযোগী রাখার জন্য যত্নের সাথে সংরক্ষণ করতে হয় ।
সংরক্ষণের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিম্নরূপ—
- সংরক্ষণ করার আগেই নিয়মানুযায়ী ধৌতকরণ, শুকানো ও ইস্ত্রির কাজটি করে নিতে হবে।
- ইস্ত্রি করা রেশমি বস্ত্রের জলীয়বাষ্প উত্তমরূপে দূরীভূত করতে হবে। তা না হলে ফাঙ্গাস সৃষ্টি হয়ে বস্ত্রের তন্তু দুর্বল হয়ে যায় এবং ব্যবহারের সময় ফেঁসে যায়।
- রেশমি কাপড়ের চরম শত্রু কাপড় কাটার রুপালি পোকা। তাই অবশ্যই সংরক্ষিত স্থানটি আর্দ্রতামুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। মাঝে মাঝে হালকা রোদে বাতাস চালনা করে শুকিয়ে নিতে হবে।
কাজ – বিভিন্ন ধরনের তন্তুর বস্ত্র সংরক্ষণে সতর্কতামূলক বিষয় সম্পর্কে লেখ।